দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দ্বিতীয় দিনেও অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিও চলছে নিরবচ্ছিন্নভাবে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, শত শত শিক্ষক মাটিতে বসে কর্মসূচি পালন করছেন। হাতে ব্যানার, মুখে দাবি—সবাই একসঙ্গে একটাই কথা বলছেন, “দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।”
আজ বিকেল ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের আরেক দফা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে সচিবালয়ে।
গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষক নেতারা সাময়িকভাবে কর্মবিরতি স্থগিতের কথা বললেও, পরবর্তীতে শহীদ মিনারে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের মতানৈক্যের কারণে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন,
“সরকারের আশ্বাস আমরা শুনেছি, কিন্তু কোনো লিখিত বা দৃশ্যমান সিদ্ধান্ত পাইনি। তাই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
অন্যদিকে দশম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক মু. মাহবুবুর রহমান জানান,
“আমরা কোথাও কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দিইনি। আমাদের তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
এর আগে শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বহু শিক্ষক আহত হন। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে শিক্ষকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শহীদ মিনার এলাকায় আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই শুরু হয় টানা অবস্থান ও কর্মবিরতি কর্মসূচি।
উপসংহার
প্রাথমিক শিক্ষকদের এই চলমান আন্দোলন শুধু বেতন কাঠামো নয়, বরং সম্মান, ন্যায্যতা ও পেশাগত মর্যাদার দাবি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। শিক্ষকরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলেন, তাই তাদের দাবিগুলো দ্রুত ও ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা জরুরি। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস মিললেও, এখন নজর সবাই রাখছে লিখিত সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের দিকে।
