ইবতেদায়ি শিক্ষকরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় শিক্ষকদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারের সাক্ষাৎ না হওয়ায়।
বুধবার বিকেলে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে দৈনিক শিক্ষাডটকম-কে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এর আগে বুধবার দুপুরে শিক্ষকদের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যান। প্রশাসনের সহযোগিতায় মন্ত্রণালয়ে পৌঁছলেও, শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ায় তারা ফিরে আসেন এবং পুনরায় আন্দোলনের প্রস্তুতি নেন।
কাজী মোখলেছুর রহমান, এস এম জয়নুল আবেদীন জিহাদী, মো. শামছুল আলম, মো. তাজুল ইসলাম ফরাজী, মাও. মো. শামসুল আলম, মাও. মোহাম্মদ আল-আমিন, মো. খোরশেদ আলম, মো. নূরুল আমিন, মাও. মো. সাইফুল ইসলাম, মো. রেজাউল হক, মো. আলতাফ হোসেন, নূর হোসেন, জাকির হোসেন, আক্তারুজ্জামান, রাকিবুল ইসলাম, আলাউদ্দিনে খান্দকার, মো. মাহমুদুল হাসান এবং রঞ্জু মিয়া।
বুধবার সকাল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি-এর ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষকরা।
অবস্থানকালে শিক্ষকরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করছেন, যেগুলোতে লেখা আছে:
- “প্রাইমারি জাতীয়করণ, আমরা কেন বিনা বেতন”
- “সরকার আসে সরকার যায়, ইবতেদায়ী শিক্ষক বিনা বেতনে কেন মারা যায়”
- “দান অনুদান নয়, সাংবিধানিক অধিকার”
- “স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ চাই”
শিক্ষকরা অভিযোগ করছেন, বছরের পর বছর ধরে সরকারের কাছে জাতীয়করণের দাবি জানালেও বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যার ফলে তাঁরা চরম অনিশ্চয়তা ও অর্থকষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
শিক্ষক নেতারা বলেন, দেশের হাজারো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় কর্মরত শিক্ষকরা মাসের পর মাস বিনা বেতনে কাজ করছেন। যদিও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান থেকে সামান্য সম্মানী দেওয়া হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব। শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ইসলামী শিক্ষা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সরকারের অবহেলায় এই শিক্ষকরা বারবার বঞ্চিত হচ্ছেন।
শিক্ষাসহ সব খবরের জন্য দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল-এর সঙ্গে থাকুন। নতুন ভিডিও মিস না করতে চাইলেই এখনই সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন, যাতে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোটিফিকেশন পৌঁছে যায়।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)
নতুন কর্মসূচি সম্পর্কে মূল উদ্দেশ্য কী?
নতুন কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো ইবতেদায়ি শিক্ষকদের জাতীয়করণ ও বেতন সমস্যা সমাধান এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়তা করা।
কর্মসূচি কখন শুরু হবে?
শিক্ষকরা আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করবেন।
কোথায় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে?
কর্মসূচি মূলত শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় প্রেস ক্লাব এর সামনে অনুষ্ঠিত হবে।
কেন শিক্ষকরা আন্দোলনে নামে?
শিক্ষকরা অভিযোগ করছেন যে, বছরের পর বছর ধরে জাতীয়করণের দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে এবং অনেক শিক্ষক এখনও বিনা বেতনে কাজ করছেন।
কর্মসূচিতে কতজন শিক্ষক অংশ নেবেন?
প্রতিনিধিদলের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ সদস্যের একটি প্রধান দল মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দাবি জানিয়েছেন। তবে মূল কর্মসূচিতে আরও হাজারো শিক্ষক অংশগ্রহণ করবেন।
কর্মসূচিতে কোন ধরণের কার্যক্রম থাকবে?
শিক্ষকরা পদযাত্রা, অবস্থান কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে তাঁদের দাবি তুলে ধরবেন। এছাড়াও প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করা হবে।
সরকার কি এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে?
এখন পর্যন্ত বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শিক্ষকরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
উপসংহার
ইবতেদায়ি শিক্ষকদের নতুন কর্মসূচি সরকারের প্রতি তাদের দীর্ঘদিনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। জাতীয়করণ, বেতন নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এই আন্দোলন শিক্ষকদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশের হাজারো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় কর্মরত শিক্ষকরা আশা করছেন, এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে তাদের চাকরি ও জীবিকা আরও সুরক্ষিত হবে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে।
