বাস্তবতা হলো—সিনিয়র শিক্ষকের জানাজায়ও ভিড় কম হয়। যেমন একজন সিনিয়র ডাক্তারের ভিজিট বেশি, সিনিয়র আইনজীবীর ফি বেশি, কিন্তু শিক্ষকের সম্মান ততটা থাকে না। প্রায় তেত্রিশ বছর কলেজে শিক্ষকতা করে আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছি—প্রবীণ শিক্ষকদের পাশে শেষ সময়ে কেউ থাকেন না।
সমাজে প্রবীণ শিক্ষকরা স্বজন, সহকর্মী, এমনকি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও অবহেলিত হন। অবসর জীবনে আয় কমে যায়, ব্যয় বেড়ে যায়, আর শারীরিক সামর্থ্য ক্ষীণ হতে থাকে। অথচ তাঁরাই জীবনের সেরা সময়টা গ্রাম-গঞ্জের প্রতিকূলতায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষার আলো দেখিয়েছেন।
কিন্তু আজ অবসর সুবিধা বিলম্ব ও অনিশ্চয়তায় তাঁরা কঠিন কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাই এখনই দরকার—শিক্ষা জাতীয়করণ।
কেন শিক্ষা জাতীয়করণ জরুরি
সরকার ইতোমধ্যেই শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বাড়িয়েছে, বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। তাহলে শিক্ষা জাতীয়করণও সম্ভব। কারণ—
- শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।
- জাতীয়করণ হলে গরিব শিক্ষার্থীদের ব্যয় কমবে, উন্নত শিক্ষার সুযোগ বাড়বে।
- ভালো-খারাপ প্রতিষ্ঠানের বিভাজন থাকবে না।
- সমান সুযোগে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা যাবে।
- নারী শিক্ষা, কর্মমুখী শিক্ষা এবং সবার জন্য শিক্ষা বাস্তবায়ন সহজ হবে।
- শহরে শিক্ষার চাপ কমে আসবে।
বিদ্যমান বৈষম্য ও সংকট
বিগত সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে শিক্ষা জাতীয়করণ হয়েছে। ফলে কেউ হয়েছেন ভাগ্যবান, কেউ হয়েছেন বঞ্চিত। এক মন্ত্রণালয়, এক সিলেবাস, এক পরীক্ষা—তারপরও শিক্ষকেরা বৈষম্যের শিকার।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে কম বেতনে পড়ালেখা করেও শিক্ষকরা বেশি সুবিধা পান, অথচ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বেশি টিউশন দিলেও শিক্ষকরা পান কম বেতন। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের পরিপন্থী।
ঐক্যের প্রয়োজন
দুর্ভাগ্যজনকভাবে শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছে অনৈক্য। সংগঠনভেদে ভিন্ন অবস্থান নেওয়ায় দাবি পূরণের বদলে বিভাজন তৈরি হয়। অথচ এখন শিক্ষক সংগঠনগুলোর মধ্যে প্রায় অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে—‘এক ঘোষণায় সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ’।
আমি বিশ্বাস করি, নেতিবাচক কর্মসূচির বদলে সকলের ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ হওয়া উচিত—
“লাখ লাখ এমপিওভুক্তের ঐক্য যদি রয়, শিক্ষা জাতীয়করণ হবে নিশ্চয়।”
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ’s)
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার ফরম পূরণ কবে শুরু হবে?
ফরম পূরণের নির্ধারিত তারিখ শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত সময়সূচিতে উল্লেখ থাকে।
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার ফরম পূরণ কবে শেষ হবে?
সময়সূচি অনুযায়ী শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফরম পূরণ সম্পন্ন করতে হবে।
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার ফরম কোথায় পাওয়া যাবে?
ফরম শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
অনলাইনে জুনিয়র বৃত্তি ফরম পূরণ করা যাবে কি?
হ্যাঁ, নির্ধারিত ওয়েবসাইটে অনলাইনে ফরম পূরণের সুযোগ রাখা হয়।
জুনিয়র বৃত্তি ফরম পূরণ করতে কোন কোন কাগজপত্র লাগবে?
প্রার্থীর ছবি, জন্মসনদ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদ, প্রয়োজনীয় ফি জমার রসিদ ইত্যাদি লাগতে পারে।
জুনিয়র বৃত্তি ফরম পূরণের ফি কত?
প্রতিবছর শিক্ষা বোর্ড থেকে ফি নির্ধারণ করা হয় এবং সময়সূচিতে তা প্রকাশিত হয়।
ফরম পূরণের শেষ সময় মিস করলে কি করা যাবে?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের পর ফরম গ্রহণ করা হয় না। তবে বোর্ড চাইলে বিশেষ সময়সীমা ঘোষণা করতে পারে।
উপসংহার
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময়সূচি প্রকাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফরম পূরণ সম্পন্ন করাই সবচেয়ে জরুরি, কারণ সময়সীমা শেষ হলে আর সুযোগ নাও থাকতে পারে। তাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি নিয়ে যথাসময়ে ফরম পূরণ করলে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিশ্চিন্তে এগিয়ে নেওয়া যাবে। বৃত্তি পাওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন আর্থিক সহায়তা পাবে, তেমনি পড়াশোনায় আরও উৎসাহিত হবে।
