ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া খাগান এলাকায় অবস্থিত সিটি ইউনিভার্সিটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে রোববার দিবাগত রাতে সংঘর্ষ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জারি করা জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিটি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের নির্দেশে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মীর আকতার হোসেন স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে — “অনিবার্য কারণবশত আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, চারটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের আজই (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে, কারণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে না।
এর আগে, গায়ে থুথু পড়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষটি শুরু হয় রাত ৯টার দিকে এবং চলে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
এই সংঘর্ষে সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে দাবি করেছেন উপাচার্য লুৎফর রহমান। তিনি আরও জানান, সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু স্থাপনায় লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
উপসংহার
সাভারের সিটি ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার জন্য গভীর উদ্বেগের। সিটি ইউনিভার্সিটির বন্ধ ঘোষণা এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ সাময়িক সমাধান হলেও, দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ এবং শান্তিপূর্ণ শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
