চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আসলাম খানের কিছু ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তিনি খালি গায়ে নিজ কার্যালয়ের সামনে বসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সম্বোধন করে চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন। এছাড়া এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে গানের সুরে মাদক গ্রহণের কথা বলছেন।
মো. আসলাম খান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বাসিন্দা। ৯ অক্টোবর তিনি বান্দরবানের থানচি উপজেলা থেকে বদলি হয়ে সন্দ্বীপে যোগদান করেন। ভাইরাল ভিডিওটি নওশাদ আকরাম নামের স্থানীয় সাংবাদিকের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ধারণ করা হয়। সাক্ষাৎকারটি ২৩ অক্টোবর হয়, যেখানে শিক্ষাকর্মী অভিযোগের জবাব না দিয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা ও মাদক গ্রহণের কথা বলেন।
ফেসবুকে ‘সন্দ্বীপ সংযোগ’ নামের পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয় এবং ২২ ঘণ্টার মধ্যে ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ এটি দেখেছেন। দর্শকরা বিভিন্ন মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যেমন, ফছিহুল আলম লিখেছেন, “সন্দ্বীপ উপজেলা যেন এক পুনর্বাসন কেন্দ্র,” মো. আল মামুন লিখেছেন, “এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সন্দ্বীপে একটি ব্রিজ প্রয়োজন।”
খোঁজে জানা গেছে, থানচিতে কর্মরত অবস্থায় ১৭ জুলাই মৌলিক প্রশিক্ষণের সময় মো. আসলাম খান এক যুগ্ম সচিবকে গালিগালাজ করার কারণে শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের অভিযোগে নোটিশ পান। নোটিশের জবাব না দেওয়ায় বিভাগীয় মামলা হয় এবং পরবর্তীতে তাকে সন্দ্বীপে বদলি করা হয়।
মো. আসলাম খান ভিডিওগুলোর সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কর্মজীবনে এটি আমার ৩২তম বদলি। আমি ৮–১০ বার বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হয়েছি। এগুলো এখন আমার পরম বন্ধু।”
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন এবং বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এস. এম. মোসলেম উদ্দিনও জানান, উপজেলা পর্যায় থেকে জেলা অফিসে অভিযোগ এলে তা গ্রহণ করা হবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)
শিক্ষা কর্মকর্তার ভাইরাল ভিডিওতে কী দেখানো হয়েছে?
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আসলাম খান খালি গায়ে ইউএনওকে সম্বোধন করে চিৎকার করছেন এবং সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে গানের সুরে মাদক গ্রহণের কথা বলছেন।
ভিডিওটি কোথায় ভাইরাল হয়েছে?
ভিডিওটি মূলত ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে এবং বিভিন্ন আইডি-পেজে শেয়ার করা হয়েছে, বিশেষ করে ‘সন্দ্বীপ সংযোগ’ পেজে।
মো. আসলাম খানের বাড়ি কোথায়?
মো. আসলাম খান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বাসিন্দা।
মো. আসলাম খানের বদলি সংক্রান্ত তথ্য কী?
তিনি ৯ অক্টোবর বান্দরবানের থানচি উপজেলা থেকে সন্দ্বীপে বদলি হন। এর আগে থানচিতে কর্মরত অবস্থায় তিনি শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের কারণে নোটিশ পান।
ভিডিওতে মাদক গ্রহণের কথা বলা হয়েছে কিভাবে?
নওশাদ আকরাম নামের সাংবাদিককে সাক্ষাৎকারের সময় মো. আসলাম খান গানের সুরে মাদক গ্রহণের কথা বলেছেন।
ভিডিওটির মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন?
ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই সমালোচনায় মেতে উঠেছেন। কেউ এটিকে শিক্ষাব্যবস্থার জন্য উদ্বেগজনক মনে করছেন।
মো. আসলাম খান কি ভিডিওটির সত্যতা স্বীকার করেছেন?
হ্যাঁ, তিনি ভিডিওটির সত্যতা স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, “কর্মজীবনে এটি আমার ৩২তম বদলি। আমি ৮–১০ বার বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হয়েছি।”
উপসংহার
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার ভাইরাল ভিডিও শিক্ষাব্যবস্থার দায়িত্বশীলতা ও আচরণ সম্পর্কে নতুনভাবে বিতর্ক উত্থাপন করেছে। ভিডিওতে চিৎকার, চেঁচামেচি এবং মাদক গ্রহণের উল্লেখ শিক্ষার্থীদের এবং স্থানীয় সমাজের জন্য উদ্বেগজনক। একই সঙ্গে এটি সরকারি কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা, দায়বদ্ধতা এবং পেশাগত আচরণের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে।
