বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বৃদ্ধি করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক চাহিদা নিরূপণের উদ্দেশ্যে আয়োজিত ‘সোশ্যাল ইমোশনাল লার্নিং ট্রেইনিং ম্যাটেরিয়াল অ্যান্ড ম্যানুয়াল রিভিউ’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ তথ্য জানান। তিন দিনব্যাপী এই কর্মশালাটি ইউজিসি ও ইউনেস্কো যৌথভাবে কমিশনের অডিটোরিয়ামে আয়োজন করেছে।
প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন জানান, ইউনেস্কোর সহায়তায় সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইউজিসি। এই প্রকল্পের আওতায় ২২টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে সারা দেশে ১০ লাখ শিক্ষার্থী এই সেবার আওতায় আনা হবে।
ইউজিসির ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোছা. জেসমিন পারভিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম।
প্রফেসর আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, সম্প্রতি ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এসব পরিস্থিতি থেকে শিক্ষণীয় পাঠ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তিনি শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের শক্ত ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
প্রফেসর আইয়ুব ইসলাম উল্লেখ করেন, কর্মশালার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের জন্য অনলাইন ও অফলাইন মাধ্যমে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম এবং সহায়ক উপাদানগুলো যাচাই ও চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন আইইউবিএটির প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান, ইউনেস্কোর প্রতিনিধি রাজু দাস, ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা, কাউন্সিলর, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শিক্ষার্থী এবং ইউজিসি’র কর্মকর্তারা।
উল্লেখযোগ্য, সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ মডিউল তৈরি করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সৈয়দ তানভীর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মো. রাফিউজ্জামান, ব্র্যাক আইইডি এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন মনোবিজ্ঞানী এই মডিউলটি তৈরি করেছেন। আগামী নভেম্বর মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম শুরু হবে।
শিক্ষা ও অন্যান্য খবরের জন্য আমাদের দৈনিক বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকুন। নতুন ভিডিও মিস না করতে, চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। এতে আপনার ডিভাইসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
উপসংহার
ইউজিসির উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। সামাজিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং বিশেষ মডিউল তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছেন। এই প্রক্রিয়া কেবল শিক্ষার্থীদের মানসিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে না, বরং তাদের নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধও জাগ্রত করবে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্প দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার দিকে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
