ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মাদক কারবারি ও ভবঘুরে উচ্ছেদ অভিযানকালে ডাকসু কার্যনির্বাহী সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা লাঠি হাতে এক বৃদ্ধকে তাড়ানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক সমালোচনা ও আলোচনা শুরু হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, সর্ব মিত্র লাঠি হাতে বৃদ্ধকে ধমক দিচ্ছেন এবং ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলছেন। একই সময়ে প্রক্টরিয়াল টিমের একজন সদস্য ওই বৃদ্ধের ব্যাগে লাঠি দিয়ে আঘাত করছেন।
ডাকসু নেতারা দাবি করেছেন, ভিডিওতে দেখা বৃদ্ধ মূলত মাদক কারবারে জড়িত। বারবার সতর্ক করার পরও তিনি ক্যাম্পাসে মাদক সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে তাকে ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই সর্ব মিত্রের আচরণ নিন্দা জানিয়েছেন, তবে কেউ কেউ তাকে ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখেছেন।
ঢাবি ছাত্রদলের নেতা ইব্রাহিম হোসেন বলেছেন, ক্ষমতা পাওয়ার অর্থ তা ব্যবহার করার সুযোগ নয়। একজন বৃদ্ধের সঙ্গে এমন আচরণ অনুচিত। অন্যদিকে, অমর একুশে হলের শিক্ষার্থী রাজু চৌধুরী জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধ মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য এমন অভিযান জরুরি।
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের বলেন, ভিডিওতে দেখা বৃদ্ধ সত্যিই মাদক কারবারি, তবে লাঠি হাতে শাসন সঠিক পদ্ধতি নয়। প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
সর্ব মিত্র চাকমা বলেছেন, তিনি কাউকে মারেননি, কেবল ভয় দেখিয়ে সরিয়েছেন। বৃদ্ধের কাছ থেকে একবার গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছিল। তিনি বলেন, তার উদ্দেশ্য মাদকমুক্ত, ভবঘুরে-মুক্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা, এবং এর কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। তিনি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে থাকবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম জানিয়েছে, নিয়মিত তদারকি থাকলেও কিছু ভবঘুরে ও মাদকাসক্ত ব্যক্তি ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে নতুন পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে।
শিক্ষাসহ সকল খবরের জন্য দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করে নোটিফিকেশন চালু রাখুন।
উপসংহার
ঢাবি ক্যাম্পাসে মাদক ও ভবঘুরে উচ্ছেদ অভিযানের সময় ডাকসু নেতার লাঠি হাতে বৃদ্ধকে সরানোর ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যদিও কিছু লোক এই পদক্ষেপকে প্রয়োজনীয় মনে করছেন, অনেকেই এটিকে অনুচিত বলছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং প্রক্টরিয়াল টিমের সঠিক তদারকি ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নিরাপদ ও মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস বজায় রাখা যায়।
