পাকিস্তান বাংলাদেশে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। এ প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে দেশের ভেতরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপন এবং ৫০০ নতুন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান।
শুধু শিক্ষাক্ষেত্রেই নয়, পাকিস্তান সিকিউরিটি প্রিন্টিং ও ব্যাংকিং খাতে আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এতে ব্যাংক নোট, প্রাইজবন্ড, জুডিশিয়াল ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও অন্যান্য নিরাপত্তা সামগ্রী মুদ্রণে ব্যবহৃত নিরাপত্তা কালির সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি তারা ব্যাংকিং খাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রস্তাবও দিয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) সভা, যেখানে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আর পাকিস্তানের পক্ষে উপস্থিত থাকবেন ফেডারেল অর্থনৈতিক মন্ত্রী আহাদ খান চীমা। সভায় বাংলাদেশের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করবে।
ইআরডি সূত্র জানিয়েছে, জেইসি সভায় পাকিস্তানের প্রস্তাবগুলো প্রাধান্য পাবে। এর মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, ভ্যাকসিন উন্নয়ন, গবেষণা এবং গবাদিপশু উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তান বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য মডেল গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তাছাড়া পাকিস্তান আইসিটি খাত, মেরিটাইম এবং শিল্প খাতে সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং করপোরেশনের মধ্যে মেরিটাইম সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি সমঝোতা স্মারকও সই হওয়ার কথা রয়েছে। পাকিস্তান বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের সুযোগ প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া হালাল শিল্প এবং চিনিশিল্প উন্নয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদানের আগ্রহ দেখিয়েছে।
এই উদ্যোগগুলো দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)
পাকিস্তান বাংলাদেশের কোন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে?
পাকিস্তান বাংলাদেশের মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা শিক্ষার মান ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।
শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের প্রস্তাবের পরিমাণ কত?
পাকিস্তান বাংলাদেশের ৫০০ নতুন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
বৃত্তি কার জন্য প্রযোজ্য হবে?
বৃত্তি বাংলাদেশের যোগ্য শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য হবে, যারা উচ্চশিক্ষা অর্জনে আগ্রহী।
পাকিস্তানের এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্য কী?
প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা।
জেইসি সভায় এই প্রস্তাব কীভাবে আলোচ্য হবে?
আজ সোমবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) সভায় এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।
পাকিস্তান ব্যাংকিং ও সিকিউরিটি প্রিন্টিং খাতে কী সহযোগিতা দিতে চায়?
পাকিস্তান আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিয়ে নিরাপত্তা কালির সরবরাহ, ব্যাংকিং প্রশিক্ষণ এবং নিরাপদ নোট মুদ্রণে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
পাকিস্তান বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে কী ধরনের সহযোগিতা দিতে চায়?
পাকিস্তান বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং ভ্যাকসিন উন্নয়ন খাতে যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে আগ্রহী।
উপসংহার
পাকিস্তানের এই প্রস্তাব বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ও শিল্প খাতে একটি নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপন এবং ৫০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে দুই দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও দৃঢ় হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং, সিকিউরিটি প্রিন্টিং, মেরিটাইম ও স্বাস্থ্য খাতের যৌথ উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক ও পারস্পরিক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করবে।
