আমেরিকার নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় শক্তি সৃষ্টি হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে, কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ তার ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২ অক্টোবর সকাল ৯টার সময় জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার জানিয়েছে যে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় শক্তির কেন্দ্র ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের পূর্বদিকে এবং কলকাতা থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার ক্ষেত্রে প্রায় ৮৩ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ঘূর্ণিঝড় শক্তি আজ রাতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের উপকূলে স্থলভাগে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর এটিকে এখনও গভীর নিম্নচাপ হিসেবে গণ্য করছে।
যদিও ঘূর্ণিঝড় শক্তি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাবে না, এর প্রভাবে বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয় রাজ্যে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এটি একটি বৈপ্লবিক ঘটনা, কারণ বর্ষা মৌসুম চলাকালীন বঙ্গোপসাগরে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়া সাধারণত খুবই বিরল। এই বছর বঙ্গোপসাগরে রেকর্ড সংখ্যক মৌসুমী লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ একের পর এক সৃষ্টি হয়েছে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ কোথায় সৃষ্টি হয়েছে?
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ সৃষ্টি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় শক্তির বাতাসের গতি কত?
এর কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার, আর দমকা হাওয়ায় ৮৩ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ঘূর্ণিঝড় শক্তি কবে স্থলভাগে আঘাত হানবে?
আজ রাতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের মধ্যবর্তী উপকূলে স্থলভাগে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাব কেমন হবে?
সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানবে না, তবে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার প্রভাব পড়তে পারে।
কোন কোন ভারতীয় রাজ্যে প্রভাব বেশি পড়বে?
অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার প্রভাব পড়বে।
ঘূর্ণিঝড় শক্তির কারণে বৃষ্টিপাত কবে পর্যন্ত হতে পারে?
আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড় শক্তিকে কীভাবে বিবেচনা করছে?
তারা এখনও একে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে গণ্য করছে।
উপসংহার
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ একটি ব্যতিক্রমী আবহাওয়া পরিস্থিতি, কারণ বর্ষা মৌসুম চলাকালীন পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় সাধারণত তৈরি হয় না। যদিও এটি সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানবে না, তবুও এর প্রভাবে আগামী কয়েকদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলে শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে পারে এই ঝড়।
