প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিনটি দাবি আদায়ে সারা দেশে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন। শিক্ষক সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের মতে, যদি দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনসহ পূর্ণদিবস অনশনে যাওয়ার ঘোষণা থাকবে। শিক্ষকেরা এই কর্মসূচি চালু করেছেন ‘নো গ্রেড, নো ওয়ার্ক’ শীর্ষক কর্মসূচির মাধ্যমে, যার অংশ হিসেবে রোববারও শিক্ষকরা ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে বিরত থাকবেন।
শনিবার বিকেলে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক খায়রুন নাহার লিপি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন, “আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে। সারা দেশের শিক্ষকরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বিরত থাকবেন।”
এই কর্মসূচির কারণে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। শিক্ষকরা জানান, “সরকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেয়নি। বাধ্য হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করতে হয়েছে। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। আশা করি সরকার দ্রুত যৌক্তিক পদক্ষেপ নেবে।”
অপরদিকে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার ভোলার এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, “প্রাথমিক শিক্ষকদের উন্নতির জন্য আমরা সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দিয়েছো সম্ভব হয়েছে, এবং সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দেয়ার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করি সফল হব।”
শিক্ষক নেতারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে ১১তম গ্রেড দেয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষক হতাশ। সীমিত পরিষদে কর্মসূচি পালন করেও দাবি পূরণ হয়নি, ফলে শিক্ষকরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটছেন।
শিক্ষা সংক্রান্ত সব খবর সবার আগে পেতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন। বেল বাটন ক্লিক করলে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে ভিডিও নোটিফিকেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে যাবে।
উপসংহার
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি শিক্ষাক্ষেত্রে চলমান সমস্যা এবং তাদের ন্যায্য দাবির পরিচায়ক। তিন দাবির বাস্তবায়ন না হলে শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ব্যাঘাত, বিশেষ করে বার্ষিক পরীক্ষায় অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। শিক্ষকরা দৃঢ়ভাবে তাদের দাবি আদায়ের পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সরকারের যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা এবং শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।
