দীর্ঘদিন ধরে চলা পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে ‘সহানুভূতির নম্বর’ দেওয়ার প্রথা থেকে এবার বেরিয়ে আসছে সরকার। চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় বোর্ডগুলো নির্দেশ দিয়েছে যে, পরীক্ষার্থী যা লিখেছে, সেই অনুযায়ীই নম্বর দিতে হবে—কম বা বেশি নয়।
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পরীক্ষা খাতায় ২৮ পেলে ৩৩ নম্বর দেওয়া বা দুই থেকে পাঁচ নম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে গ্রেড উন্নীত করার অলিখিত নিয়ম চালু ছিল। তবে ২০২৫ সাল থেকে তা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে।
দেশের শিক্ষাবিষয়ক ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে ‘সহানুভূতির নম্বর’ বাতিল করা উচিত বলে মনে করেন ৮৩% মানুষ। বাকি ১৬% এতে একমত নন, এবং ১% মন্তব্য করেননি।
জরিপে অংশ নিয়েছেন ২,৫৬৫ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এর মধ্যে ২,১১৭ জন হ্যাঁ এবং ৪১৯ জন না ভোট দিয়েছেন। ২৯ জন কোনো মন্তব্য করেননি।
এইচএসসির পরীক্ষকদের বোর্ডের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—প্রশ্নপত্রে যা চাওয়া হয়েছে, শুধু সেটি বিবেচনায় আনা হবে। অতিরিক্ত তথ্য লিখলে বা আংশিক উত্তর দিলে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হবে না। মূল প্রশ্নের সঠিক উত্তর না থাকলে নম্বরও দেওয়া হবে না।
শিক্ষাসহ সর্বশেষ খবর জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন, যাতে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে নতুন ভিডিও নোটিফিকেশন মিস না হয়।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)
সহানুভূতির নম্বর কী?
সহানুভূতির নম্বর হলো পরীক্ষার্থীর খাতায় অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার একটি প্রথা, যা মূল উত্তর অনুযায়ী নয়, পরীক্ষার্থীর সুবিধার জন্য দেওয়া হয়।
সরকার কেন সহানুভূতির নম্বর বাতিল করতে চাইছে?
সরকার চাইছে নম্বর শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীর লেখা উত্তর অনুযায়ী দেওয়া হোক, যাতে মূল্যায়ন ন্যায্য ও সঠিক হয়।
কোন পরীক্ষাগুলিতে সহানুভূতির নম্বর বাতিল হয়েছে?
চলতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য বোর্ডগুলো ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে নম্বর শুধুমাত্র মূল উত্তর অনুযায়ী দেওয়ার জন্য।
সহানুভূতির নম্বর দেওয়ার পুরনো নিয়ম কী ছিল?
পুরনো নিয়মে ২৮ পেলে ৩৩ নম্বর দেওয়া বা দুই থেকে পাঁচ নম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে গ্রেড উন্নীত করা হতো।
৮৩% মানুষ কেন সহানুভূতির নম্বর বাতিলের পক্ষে?
বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, শিক্ষার্থীর নির্ধারিত উত্তর অনুযায়ী সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত, যা ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছ।
কি কারণে ১৬% মানুষ বাতিলের বিরোধী?
কিছু মানুষ মনে করেন, সহানুভূতির নম্বর কিছু পরীক্ষার্থীর জন্য সুবিধাজনক ছিল, যা বাতিল হলে তাদের ক্ষতি হতে পারে।
সহানুভূতির নম্বর বাতিল হলে মূল্যায়ন কেমন হবে?
এখন থেকে শিক্ষার্থীর খাতায় যা লেখা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নম্বর দেওয়া হবে। অতিরিক্ত বা আংশিক নম্বর দেওয়া হবে না।
উপসংহার
পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে ‘সহানুভূতির নম্বর’ বাতিল করার সিদ্ধান্ত দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে ধরা হচ্ছে। চলতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় বোর্ডের কড়া নির্দেশনার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, শিক্ষার্থীর নির্ধারিত উত্তর অনুযায়ী নম্বর দেওয়া হবে।
জরিপে দেখা গেছে, ৮৩% মানুষ এই সিদ্ধান্তের পক্ষে, যা প্রমাণ করছে, জনগণ ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছ মূল্যায়নের পক্ষে। সহানুভূতির নম্বর বাতিলের ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের আসল দক্ষতা ও জ্ঞান অনুযায়ী সঠিকভাবে মূল্যায়িত হবেন।
