প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বদলি প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম ও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, অনেক শিক্ষক ছুটি না নিয়ে সরাসরি ঢাকায় এসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করছেন। এমনকি বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরাও ফোন করে বদলির জন্য সুপারিশ করছেন। এতে অধিদপ্তরের নিয়মিত কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে এবং চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষকদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, বদলির জন্য সরাসরি আবেদন না করে নিয়ম মেনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। একই সঙ্গে নৈমিত্তিক ছুটি প্রদানে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এই সংক্রান্ত চিঠি সব জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্কুল-কলেজ ও ইংলিশ মিডিয়ামে ৭ মার্চ উদযাপনের আয়োজন
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বদলির বিষয়ে শিক্ষকরা প্রায়ই মহাপরিচালকের কাছে সরাসরি আবেদন করেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছুটির অনুমতি ছাড়াই ঢাকায় আসেন। এতে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হয়, দাপ্তরিক কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভাঙনের ঝুঁকি তৈরি হয়।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০ জুলাইয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অফলাইন বদলি ও সংযুক্তি কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র অনলাইনে বদলি কার্যক্রম চালু রয়েছে।
সর্বাধিক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি (FAQ’s)
কেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষকদের সরাসরি আবেদন নিষেধ করেছে?
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, সরাসরি আবেদন করলে দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হয় এবং চেইন অব কমান্ড ভাঙার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য শিক্ষকরা নিয়ম মেনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
শিক্ষকরা কি ছুটি না নিয়ে ঢাকায় এসে আবেদন করতে পারবেন?
না, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ছুটি ছাড়া ঢাকায় এসে সরাসরি আবেদন করা চলবে না।
বদলির জন্য সুপারিশ করা কতটা বৈধ?
বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা ফোন বা সরাসরি সুপারিশ করলে তা দাপ্তরিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে পারে। তাই শুধুমাত্র নিয়মিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বদলির আবেদন গ্রহণযোগ্য।
নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে কোন সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে?
শিক্ষকদের বলা হয়েছে, নৈমিত্তিক ছুটি যথাযথভাবে অনুমতি নিয়ে গ্রহণ করতে হবে এবং বদলির জন্য ছুটি ব্যবহার করা যাবে না।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানোর উদ্দেশ্য কী?
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চিঠি প্রেরণ করেছে যাতে জেলা পর্যায়ে সকল শিক্ষকদের সতর্ক করা ও নিয়মিত প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা যায়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কি প্রভাবিত হচ্ছে?
হ্যাঁ, অনিয়মিত বদলি ও সরাসরি আবেদন বিদ্যালয়ের সাধারণ পাঠদান ও কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে।
২০ জুলাইয়ের স্মারকের মানে কী?
২০ জুলাই সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের অফলাইন বদলি ও সংযুক্তি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপসংহার
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছে, শিক্ষকদের বদলি ও ছুটির বিষয়ে নিয়ম এবং অনুমতির গুরুত্ব অপরিসীম। সরাসরি আবেদন বা অননুমোদিত ঢাকার যাত্রা দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত করে এবং বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান প্রভাবিত করে। শিক্ষকরা সতর্কভাবে নিয়মিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবেদন ও ছুটি ব্যবহার করলে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং সকলের জন্য সুবিন্যস্ত কাজের পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
