চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল হাসান শান্ত আহত হন। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন জানান, ঘটনাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই জড়িত। বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্টদের প্রক্টর অফিসে ডাকা হয়েছে, তাদের বক্তব্য শুনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অভিযোগ রয়েছে, বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও বগুড়া অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাকিল শোভন সমাজতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে ফোনে ও সরাসরি উত্যক্ত করে আসছিলেন। মঙ্গলবার রাতেও একই ঘটনা ঘটলে, ছাত্রীটি বিষয়টি তার বন্ধু সমাজতত্ত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আরাফাতকে জানান।
পরে আরাফাত অভিযুক্ত শাকিলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে বাকবিতণ্ডা ও সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে রবিউল হাসান শান্ত আহত হন। খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, “শাকিল এক মাস ধরে আমাকে ফোনে বিরক্ত করছিল, পেছনে পেছনে ঘুরত। বারবার নিষেধ করার পরও থামেনি। সিনিয়র হওয়ায় বিষয়টি কাউকে জানাইনি। মঙ্গলবার রাতে আবার উত্যক্ত করলে বন্ধুদের জানাই।”
শাহরিয়ার আরাফাত বলেন, “ঘটনার বিষয়ে জানতে শাকিলকে ফোন দিলে তিনি তিনটি মোটরসাইকেলে লোকজন নিয়ে এসে আমাকে মারধর করেন। পরে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা আমাকে উদ্ধার করেন।”
আহত শিক্ষার্থী রবিউল হাসান শান্ত দাবি করেন, “আমি কেবল মীমাংসার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু উল্টো আমাকে মারধর করা হয়।”
সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, “ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। প্রক্টরিয়াল বডি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ তাদের বক্তব্য শুনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত শাকিল শোভনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনাটি কবে ঘটেছে?
ঘটনাটি মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ঘটেছে।
সংঘর্ষের কারণ কী ছিল?
এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগকে কেন্দ্র করেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এই ঘটনায় কে আহত হয়েছেন?
বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল হাসান শান্ত সংঘর্ষে আহত হন।
অভিযুক্ত হিসেবে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে?
অভিযোগ রয়েছে, বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাকিল শোভন, যিনি বগুড়া অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
ভুক্তভোগী ছাত্রী কোন বিভাগের শিক্ষার্থী?
তিনি সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী।
সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা কী ছিল?
খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তদন্ত শুরু করে।
ঘটনাটি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কী বলেছেন?
সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন জানিয়েছেন, দুই পক্ষকেই প্রক্টর অফিসে ডাকা হয়েছে, তাদের বক্তব্য শুনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপসংহার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া এই সংঘর্ষ আবারও প্রমাণ করেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখা কতটা জরুরি। এমন ঘটনা শুধু শিক্ষাঙ্গনের সুনাম ক্ষুণ্ন করে না, বরং শিক্ষার্থীদের মানসিক শান্তি ও শিক্ষার পরিবেশকেও নষ্ট করে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ ও ন্যায়সংগত তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঠিক বিচার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।